Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়নের পথপ্রদর্শক বঙ্গবন্ধু

বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়নের পথপ্রদর্শক বঙ্গবন্ধু
ড. মো: আবদুল মুঈদ
১৯৭২, যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বাধীন বাংলাদেশ। বিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা। ভঙ্গুর অর্থনীতি। অর্ধাহার, অনাহার খাদ্যাভাবে অসহায় জনগণ। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দায়িত্ব নিলেন দারিদ্র্য ক্ষুধামুক্ত সোনার বাংলা গড়ার। সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করলেন কৃষি সেক্টরকে। ডাক দিলেন সবুজ বিপ্লবের। খাদ্য উৎপাদনের কারিগর কৃষকদের উদ্দেশ্যে বললেন, ‘কৃষক ভাইদের প্রতি আমার অনুরোধ, কৃষি উৎপাদন বাড়িয়ে সবুজ বিপ্লব সফল করে তুলুন। বাংলাদেশকে খাদ্যে আত্মনির্ভর করে তুলুন।’

বঙ্গবন্ধু কৃষিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে প্রণয়ন করেন রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা। আধুনিক কৃষিকে ধারণ ও লালন করার যোগ্য কাঠামো-অবকাঠামো তৈরিতে মনোযোগী হন। কৃষিশিক্ষা, গবেষণা, সম্প্রসারণ ও উপকরণ বিতরণ কার্যক্রম সুচারুভাবে পরিচালনার জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এ সময় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি), উদ্যান উন্নয়ন বোর্ড, বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি ইত্যাদি প্রতিষ্ঠিত হয়। আধুনিকায়ন হয় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি), বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান, পাট গবেষণা প্রতিষ্ঠান, ধান গবেষণা প্রতিষ্ঠানের। কৃষিবান্ধব বঙ্গবন্ধুর যুগান্তকারী পদক্ষেপগুলো নিম্নরূপ।

কৃষকের পাশে বঙ্গবন্ধু : বঙ্গবন্ধু রাজনীতি জীবনের শুরু থেকে কৃষকের কল্যাণের কথা ভাবতেন। তিনি বলেছিলেন,  ‘আমাদের সমাজে চাষীরা হলো সবচেয়ে দুঃখী ও নির্যাতিত শ্রেণী এবং তাদের অবস্থার উন্নতির জন্য আমাদের উদ্যোগের বিরাট অংশ অবশ্যই তাদের পেছনে নিয়োজিত করতে হবে।’ তাই তো তিনি ১৯৭২ সালের ১৩ জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদের প্রথম বৈঠকে কৃষকদের বকেয়া খাজনার সুদ মওকুফ করেন। সাথে সাথে ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির খাজনাও মওকুফ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। জমির মালিকানায় সর্বোচ্চ সিলিং ১০০ বিঘা নির্ধারণ করে উদ্বৃত্ত জমি ও খাসজমি ভূমিহীন ও প্রান্তিক চাষিদের মধ্যে বণ্টনের উদ্যোগ নেন। পাকিস্তানি শাসনামলে রুজু করা ১০ লাখ সার্টিফিকেট মামলা থেকে কৃষকদের মুক্তি দেন।

উন্নয়ন বরাদ্দে কৃষিকে অগ্রাধিকার : বঙ্গবন্ধু সরকারের প্রথম বার্ষিক পরিকল্পনায় ১৯৭২-৭৩ সালে ৫০০ কোটি টাকা উন্নয়নের বরাদ্দ থেকে ১০১ কোটি টাকা শুধু কৃষি উন্নয়নের জন্য রাখা হয়েছিল। কারণ বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্য ছিল ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ। তিনি বিশ্বাস করতেন খাদ্যের নিশ্চয়তা দিতে না পারলে সব উন্নয়ন কার্যক্রম বিফলে যাবে। তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন নিজেদের প্রয়োজনীয় খাদ্য নিজেরা উৎপাদন করতে হবে। তিনি বলেছিলেন, ‘দুনিয়া ভরে চেষ্টা করেও আমি চাউল কিনতে পারছি না। চাউল পাওয়া যায় না। যদি চাউল খেতে হয় আপনাদের চাউল পয়দা করে খেতে হবে।

কৃষিবিদদের প্রথম শ্রেণীর মর্যাদা প্রদান ও মেধাবীদের আকৃষ্টকরণ : বঙ্গবন্ধু উপলব্ধি করেছিলেন কৃষি বিপ্লব বাস্তবায়নে কঠোর পরিশ্রমী চাষিদের সাথে মেধাবী কৃষিবিদদের প্রয়োজন হবে। মেধাবী ছাত্রদের কৃষি শিক্ষায় আকর্ষণ করার জন্য কৃষিবিদদের তিনি সরকারি চাকুরিতে প্রথম শ্রেণীর মর্যাদা দিয়েছিলেন। এই যুগান্তকারী পদক্ষেপের কারণে পরবর্তীতে মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা কৃষি শিক্ষায় আগ্রহী হয়ে ওঠে। কৃষিতে ¯œাতক ও উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের পর কৃষি গবেষণা, কৃষি সম্প্রসারণসহ কৃষির সর্বক্ষেত্রে অবদান রাখে। উদ্ভাবন হয় নতুন নতুন জাত, প্রযুক্তি, কৃষকদের আধুনিক কৃষি কলাকৌশলের প্রশিক্ষণ প্রদান ও নানাবিধ কৃষি উন্নয়ন কর্মকা-ের কারণে আজ বাংলাদেশের কৃষিক্ষেত্রে অর্জিত হয়েছে কাক্সিক্ষত সাফল্য, যা বিশ্বে একটি রোল মডেল হিসেবে পেয়েছে স্বীকৃতি। 

কৃষিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান স্থাপন : বঙ্গবন্ধুর কৃষি উন্নয়নের বৈপ্লবিক পদক্ষেপের আরেকটি উল্লেখযোগ্য হলো কৃষিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান স্থাপন, পুনঃসংস্কার নিশ্চিত করা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পর পাকিস্তান তুলা সরবরাহ বন্ধ করে দিলে স্থায়ীভাবে শিল্প কারখানায় তুলার চাহিদা পূরণে তুলা উৎপাদনের গুরুত্ব অনুধাবন করেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৭২ সালে দেশে প্রতিষ্ঠা করেন তুলা উন্নয়ন বোর্ড। শুরু হয় তুলার চাষ সম্প্রসারণের কাজ। কৃষির উন্নয়নে প্রয়োজন আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি, বিভিন্ন ফসলের উচ্চফলনশীল জাত। কৃষি গবেষণা জোরদার ছাড়া কৃষির উন্নতি সম্ভব নয়, বঙ্গবন্ধু তা মর্মে মর্মে উপলব্ধি করেছিলেন। ১৯৭৩ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল- কৃষি গবেষণা সমন্বয়ের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান। ১৯৭২ সালে পুনর্গঠন করেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং ঢাকার আনবিক গবেষণা কেন্দ্রে কৃষি পারমাণবিক গবেষণা ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার এগ্রিকালচার (ইনা) প্রতিষ্ঠা করার নির্দেশ দেন, যা ১৯৭৫ সালের শুরুতে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার এগ্রিকালচার (বিনা) হিসেবে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে স্থানান্তর হয়। 

শাকসবজি ও ফলমূল উৎপাদন ও জনগণের পুষ্টি চাহিদা পূরণে স্থাপন করেন হর্টিকালচার বোর্ড। মানসম্মত বীজ কৃষি উৎপাদনে অন্যতম নিয়ামক। কৃষকের কাছে উন্নত জাতের মানসম্মত বীজ সহজলভ্য করার লক্ষ্য প্রতিষ্ঠা করেন সিড সার্টিফিকেশন এজেন্সি (এসসিএ)। তিনি বীজের উপর গুরুত্ব দিয়ে বলেছিলেন, “নিজেরা বীজ উৎপাদন করতে হবে। প্রয়োজনে শুরুতে বিদেশ থেকে মানসম্পন্ন বীজ আমদানী করে দেশের প্রাথমিক চাহিদা মেটাতে হবে। পরে নিজেরাই মানসম্পন্ন উন্নত বীজ উদ্ভাবন -উৎপাদন করব।” সোনালি আঁশ পাটের উন্নয়নে গবেষণার উপর জোর দেন এবং ‘জুট অ্যাক্ট’ এর মাধ্যমে প্রাক্তন জুট এগ্রিকালচার রিসার্চ ল্যাবরেটরিকে জুট রিসার্চ ইনস্টিটিউট নামে পুনর্গঠন করেন। 

কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য অন্যতম আরেকটি নিয়ামক হলো কৃষি সেচব্যবস্থা। এক ফসলি জমিকে দুই ফসলি কিংবা তিন ফসলি করার জন্য প্রয়োজন কৃষি সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন। বঙ্গবন্ধুর এই উপলব্ধি থেকে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) পুনর্গঠন করেন। নগদ ভর্তুকি ও সহজশর্তে ঋণ দিয়ে কৃষকের মাঝে সেচযন্ত্র বিক্রির ব্যবস্থা করেন। যেখানে ১৯৭১-৭২ সালে অগভীর নলকূপের সংখ্যা ছিল ৬৮৫টি, গভীর নলকূপের সংখ্যা ৯০৬টি এবং পাওয়ার পাম্পের সংখ্যা ছিল ২৪,২৪৩টি, তা ১৯৭৪-৭৫ সালে বেড়ে দাঁড়ায় যথাক্রমে ৪০২৯টি, ২৯০০টি এবং ৪০,০০০টি তে।

কৃষি নির্ভর বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে কৃষির গুরুত্ব অপরিসীম- বঙ্গবন্ধু সেটা মনেপ্রাণে উপলব্ধি করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর আজীবনের লালিত স্বপ্ন এ দেশের শোষিত, বঞ্চিত, অবহেলিত কৃষকের মুখে হাসি ফোটানো। তাই তিনি কৃষি খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব ও অগ্রাধিকার প্রদান করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু সব সময়ই বলতেন, ‘আমাদের দেশের জমি এত উর্বর যে বীজ ফেললেই গাছ হয়, গাছ হলে ফল হয়। সে দেশের মানুষ কেন ক্ষুধার জ্বালায় কষ্ট পাবে।’ তিনি মর্মে মর্মে উপলব্ধি করেছিলেন, এ দেশে যেমন সোনার মাটি ও মানুষ আছে, তেমনি আছে  কৃষির অপার সম্ভাবনা। এমন সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে অর্থনীতিকে মজবুত করতে হবে। তিনি বলেছিলেন, ‘কৃষি ও কৃষক বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি।’ তিনি আরও উপলব্ধি করেছিলেন, কৃষির উন্নতি মানে শুধু ধান, গম বা ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি নয়। ভাত, রুটি খেয়ে পেট ভরে ঠিকই, কিন্তু মেধাবী জাতি গঠনে দরকার সুষম খাদ্য ও পুষ্টি। এ ছাড়া মেধাবী জাতি ছাড়া কোনো দেশের উন্নতি হয় না। সেজন্য তিনি প্রধান খাদ্যের পাশাপাশি মাছ, মাংস, ডিম, দুধ ইত্যাদির উৎপাদন বাড়ানোর ওপরও জোর দেন। তিনি সমন্বিত কৃষি ব্যবস্থার উপর জোর দেন। যৌথ খামার গড়ে তোলার আহ্বান জানান।  

বঙ্গবন্ধুর সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা ও নিরবচ্ছিন্ন কৃষি উন্নয়নের গতিকে থামিয়ে দেয় কুচক্রী মহল কর্তৃক ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টে মর্মান্তিক ও পৈশাচিক ঘটনায় বঙ্গবন্ধুর সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে। থেমে যায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মুক্তি। তবে মুছে যায়নি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ও আদর্শ। মুছে যায়নি তাঁর যুগান্তকারী কৃষি উন্নয়নের পরিকল্পনা। কৃষি উন্নয়নের জন্য যে পথ তিনি রচনা করেছেন, সেই পথ ধরে দেরিতে হলেও তাঁর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আরও বলিষ্ঠনীতি নিয়ে এ দেশের কৃষি উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁর গতিশীল নেতৃত্ব ও পরিকল্পনায় দেশ আজ খাদ্যশস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। কৃষি ক্ষেত্রে উন্নয়ন এখন সর্বজন স্বীকৃত। বাংলাদেশ পাট রপ্তানিতে বিশ্বে প্রথম ও পাট উৎপাদনে দ্বিতীয়, কাঁঠাল উৎপাদনে বিশ্বে  দ্বিতীয়, সবজি উৎপাদনে বিশ্বে তৃতীয়, ধান  উৎপাদনে বিশ্বে তৃতীয়, স্বাদু পানির মাছ উৎপাদনে বিশ্বে তৃতীয়, আম উৎপাদনে বিশ্বে  সপ্তম, পেয়ারা উৎপাদনে বিশ্বে অষ্টম, আলু উৎপাদনে বিশ্বে সপ্তম, মৌসুমি ফল উৎপাদনে বিশ্বে দশম। এই সাফল্য ও স্বীকৃতি প্রমাণ করে বাংলাদেশ এখন সারা বিশ্বে কৃষি উন্নয়নের রোল মডেল। 

বর্তমান সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকারেও বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখা ও আরও বেগবান করার লক্ষ্যে জোর দেয়া হয়েছে। এর অন্যতম হচ্ছে কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণ,   কৃষিকে আধুনিকীকরণ, কৃষকের নিকট কৃষিকে লাভজনক করা এবং টেকসই ও নিরাপদ ফসল উৎপাদন করা। এই লক্ষ্যে বর্তমানে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। জোর দেয়া হয়েছে জলবায়ু সহনশীল কৃষির উপর। এ ছাড়াও পাহাড়ি এলাকায় কাজু বাদাম, কফি ও নানান ধরনের ফলমূল চাষ, দেশের দক্ষিণাঞ্চ লবণাক্ত এলাকায় লবণ সহনশীল ফসলের চাষ, রপ্তানিমুখী ফসলের চাষ ইত্যাদির উপর। এগিয়ে যাচ্ছে কৃষি, এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। তাই তো বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের স্লোগান, “মুজিববর্ষের অঙ্গীকার, কৃষি হবে দুর্বার”।

বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, “আমার জীবনের একমাত্র কামনা, বাংলাদেশের মানুষ যেন তাদের খাদ্য পায়, আশ্রয় পায় এবং উন্নত জীবনের অধিকারী হয়।”  তাঁর চাওয়া সেই সোনার বাংলা এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তবতা।
 
লেখক : সাবেক মহাপরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও সদস্য, পরিচালনা পর্ষদ, পিকেএসএফ। মোবাইল : ০১৭১৬৯৪০৩১১, মেইল : সুঁববফনফ৬১@মসধরষ.পড়স      


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon